বগুড়ায় বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে যমুনা নদীর পাড়। সারা বছরেই বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ এবং প্রেম যমুনার ঘাটে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। তবে, ঈদে ওই দুই স্থানে বিনোদনপ্রেমীদের ঢল নামে।
সরেজমিনে গিয়ে গেছে, দর্শনার্থীরা নদীর ধারে সেলফি তুলছেন। কেউ কেউ নৌকায় করে নদীতে ভাসছেন, যাচ্ছেন ঘাট থেকে কাছাকাছি চরগুলোতে।
এদিকে, দুই স্থানেই দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে তৎপর আছে পুলিশের টহল দল।
কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধে ঘুরতে আসা রিয়াজুল, সুজা এবং রনি বলেলেন, ‘ডিএসএলআর ক্যামেরা নিয়ে এসেছি। আকাশ এবং আলো দুটোই ছবি তোলার জন্য উপযোগী। আমরা প্রেম যমুনার ঘাটেও যাবো। এরপর নৌকায় করে চর বাটিয়ায় যাবো। সেখানে গেলে আরও সুন্দর লোকেশন পাওয়া যাবে ছবি তোলার জন্য। আমরা বছরে দুই-তিনবার এখানে আসিই। পরিবেশটা খুব ভালো লাগে। আবার আমরা শীতকালে আসব। সে সময় পাখি দেখতে পাওয়া যাবে।’
খাদিজা লাবনী নামের আরেক দর্শনার্থীরা বলেন, ‘গতকাল তো মাংস কাটতে এবং প্রসেস করতেই দিন শেষ হয়ে গেছে। গতকাল ওটাতেই আনন্দ ছিল। আজ এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। এখন রোদ থাকলেও নদীর পাশে বাতাস আছে। এ কারণে ততটা অস্বস্তি লাগছে না।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আরিফুল ইসলাম শহরের নাটাই পাড়া থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন প্রেম যমুনার ঘাটে। তিনি বলেন, ‘ব্যস্ততার কারণে খুব বেশি পরিবারকে সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। এভাবে ঘোরাফেরা তো ভাগ্যের বিষয়। ছুটির দিন, তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে চলে এলাম। পরিবেশ খুব ভালো লাগছে। বিশেষ করে, নৌকায় ঘুরতে পেরে খুব ভালো লাগছে। তবে, তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘নৌকাভাড়া বেশি। মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট নৌকায় ঘুরেছি আমরা চারজন। কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ থেকে চরবাটিয়া দিয়ে ঘুরিয়ে আমাদের এখানে নামিয়ে দিলো। ভাড়া ১২০০ টাকা দিতে হয়েছে। অথচ, অন্য সময় খেয়া নৌকায় ১০-১৫ টাকায় পার হওয়া যায়।’
সারিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঈদের মধ্যে লক্ষাধিক মানুষ যমুনা নদীর ধারে ঘুরতে আসে। তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের একটি মোবাইল টিম আছে। তারা ঈদের ছুটির তিন দিন সার্বক্ষণিক ওই এলাকায় থাকছে।’
যেভাবে যাওয়া যাবে বিনোদনকেন্দ্র দুটোতে:
বগুড়া থেকে সারিয়াকান্দি উপজেলার দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। সিএনজি অটোরিকশাতে করে সেখানে গেলে সময় লাগবে ৪৫-৫০ মিনিট। সারিয়াকান্দিতে যেতে বগুড়া শহরের সাতমাথা থেকে প্রথমে যেতে হবে চেলোপাড়া সিএনজি স্ট্যান্ডে। এখানে পর্যাপ্ত সিএনজি অটোরিকশা পাওয়া যাবে সারিয়াকান্দি স্ট্যান্ডে ও কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধে যাওয়ার জন্য। চেলোপাড়া থেকে সারিয়াকান্দি সিএনজি স্ট্যান্ড পর্যন্ত ভাড়া ৫০ টাকা। স্ট্যান্ড থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে ৫-৭ মিনিটেই কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধে পৌঁছানো যাবে ২০-২৫ টাকায়। তবে, কেউ চাইলে সিএনজি অটোরিকশাকে সরাসরি কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবেন। তবে, তাতে ভাড়া গুনতে হবে ৫০ টাকার বেশি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।